মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকা
ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকা এবং  অনলাইন ও ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া  এর জন্য সম্পূর্ণ  নতুনভাবে সারাদেশ থেকে জেলা, উপজেলা,বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সরকারি কলেজ,পলিটেকনিকে একযোগে সংবাদকর্মী আবশ্যক বিস্তারিত জানতে ০১৮১৬৩৯৩২২৩

ছেলের মৃত্যু নিয়ে ট্রাম্পকে রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃসড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সন্তানের মৃত্যুকে ‘রাজনৈতিক লাভ’ এর জন্য ব্যবহার না করতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের এক বাসিন্দা।

একজন হাইতিয়ান অভিবাসী চালকের গাড়ির সঙ্গে স্কুল বাসের সংঘর্ষে তার সন্তান মারা গিয়েছিল। ২০২৩ সালের অগাস্টে ওহাইওর ছোট শহর স্প্রিংফিল্ডে ওই দুর্ঘটনায় মারা যায় ১১ বছর বয়সী এইডেন ক্লার্ক।

গত বছরের সেই ঘটনা সম্প্রতি জাতীয় রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে আসে ট্রাম্প শিবিরের প্রচারণা পর। শহরটির হাইতিয়ান অভিবাসীদের সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে তারা বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে।

মঙ্গলবার সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এইডেনের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্পের রানিং মেট জেডি ভান্স লেখেন, ‘শিশুটিকে হত্যা করেছিল একজন হাইতিয়ান অভিবাসী’। পোস্টের পর ওইদিনই সিটি কমিশনের এক সভায় এইডেনের বাবা নাথান ক্লার্ক বলেন, কথাটা পুরোনো ক্ষতকে জাগিয়ে তুলেছে।

তিনি বলেন, ‘তারা রাজনৈতিক লাভের জন্য আমার ছেলের নাম নিচ্ছে এবং তার মৃত্যুকে ব্যবহার করছে। এটা এখনই বন্ধ হওয়া দরকার। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়নি। হাইতি থেকে আসা ওই অভিবাসীর দ্বারা সংঘটিত দুর্ঘটনার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ট্র্যাজেডির ঘটনা স্থানীয়, অঙ্গরাজ্য এমনকি জাতীয় পর্যায়েও মানুষকে ছুঁয়ে গেছে। কিন্তু, এর মোড় ঘৃণার দিকে ঘুরিয়ে দেবেন না।’

হাইতির অভিবাসীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের পোষা প্রাণী ধরে খেয়ে ফেলছে এমন ভিত্তিহীন দাবিও ছড়িয়েছেন ট্রাম্প এবং ভান্স। ক্লার্কের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প আবারো এইডেন ক্লার্কের মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত দাবিটি তুলে ধরেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের সাথে প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেটের মঞ্চেই এটি নিয়ে কথা বলেন তিনি।

‘আমার ছেলে যদি একজন ষাট বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ মানুষের কারণে মারা যেত তাহলে বোধহয় ভালো হতো,’ বলছিলেন ক্লার্ক। এ সময় পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন তার স্ত্রী ড্যানিয়েল। ক্লার্ক বলেন, ‘এমন স্থূলবুদ্ধির কথা কেউ বলতে পারে, এটা হয়তো আপনাদের কল্পনারও অতীত। কিন্তু, যদি তেমন কারো হাতে আমার ১১ বছরের ছেলেটা মারা পড়তো, অনবরত ঘৃণা ছড়ানো এই লোকগুলোর হাত থেকে হয়তো আমরা রেহাই পেতাম।’

যে ভ্যানের সঙ্গে স্কুলবাসের সংঘর্ষে এইডেন মারা যায় সেটি চালাচ্ছিলেন হারমানিয়ো জোসেফ নামে একজন হাইতিয়ান অভিবাসী। জোসেফের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। রাস্তার আরেক পাশে গিয়ে স্কুল বাসকে ধাক্কা দেয় তার ভ্যান।

বাস উল্টে গেলে ছেলেটি বাইরে ছিটকে পড়ে যায়। আরও কয়েকটি শিশুও আহত হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত হত্যা এবং যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় জোসেফকে। নয় থেকে সাড়ে তের বছরের সাজা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার ট্রাম্পের প্রচারণায় ব্যবহৃত এক্স অ্যাকাউন্টে এইডেন এবং জোসেফের ছবি পাশাপাশি পোস্ট করা হয়। প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেটের আগে আগে করা পোস্টটিতে আক্রমণ করা হয় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের অভিবাসন নীতিকেও। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘মনে রাখতে হবে, ১১ বছর বয়সী এইডেন ক্লার্ক স্কুলে যাওয়ার পথে এক হাইতিয়ান অভিবাসীর হাতে নিহত হয়েছিল, যেই অভিবাসীদের কমালা হ্যারিসই এই দেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছে।’

হ্যারিস ‘এইডেনের নাম নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন’ বলেও উল্লেখ করা হয়। এরপরের দিন ভান্সের ওই পোস্টটি আসে।

নাথান ক্লার্ক বলেন, ‘তারা যত খুশি ঘৃণা উগরে দিতে পারে। অবৈধ অভিবাসন, সীমান্ত সংকট নিয়ে যা খুশি বলতে পারে। এমনকি পোষা প্রাণীর ওপর নৃশংসতা এবং কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ সেগুলো খেয়ে ফেলার মতো অসত্য দাবিও তুলতে পারে, কিন্তু, যত যাই হোক, ওহাইওর স্প্রিংফিল্ডের এইডেন ক্লার্কের নাম নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি তাদের।’

তার পরিবারের সদস্যরা এখন ‘তাদের জীবনের জঘন্য দিনগুলো পার করছে।’

বিবিসির পক্ষ থেকে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও সাড়া দেয়নি ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক বক্তব্যে তারা আশা প্রকাশ করেছে, ‘গণমাধ্যম ওহাইওর ঘটনাটির মতো মানুষের সেই সত্যিকারের দুর্দশাগুলো তুলে ধরবে, যা এতোদিন যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved ©2022 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com